আমার সম্পর্কে

আমার ফটো
kolkata, west bengal, India
৭০ দশকের এক অগ্রগণ্য বিশিষ্ট কবি। জন্ম-২৭ডিসেম্বর ১৯৫৩। জন্ম- কলকাতার দর্জিপাড়া ম্যাটারনিটি হোম।বসবাস-নিমতা। সাহিত্যের সব কটি শাখায় পারদর্শীতা আছে।অনুবাদ করেছেন বিভিন্ন ভাষার কবিতা। ছন্দ ও ছন্দহীনতায় সমান ব্যুৎপত্তি।পুরাণ,দর্শন,সমাজতত্ত্ব,ইতিহাস,বিজ্ঞান,সবকিছুই উঠে এসেছে তাঁর লেখায়। ‘সৌহার্দ্য সত্তর’,এর হয়ে প্রতিবেশী বাংলা দেশে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে ভ্রমণ করেছেন।তাঁর দীর্ঘ কবিতার সংকলন “ অনত্থপদ সংহিতা” ২০১৫ এর বিভূতিভূষণ স্মৃতি পুরস্কার –এ সম্মানিত হয়েছে। বহুদিন ধরে লিটল ম্যাগাজিনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন।‘ ক্লেদজ কুসুম’ নামে একটি প্রখ্যাত লিটল ম্যাগ সম্পাদনা করেন। প্রায় সব কটি বাণিজ্যিক-অবাণিজ্যিক কাগজে লেখা প্রকাশিত হয়েছে।বিভিন্ন ভাষার কবিতার অনুবাদেও তিনি খ্যাতি অর্জন করেছেন। নিজেকে আড়ালে রাখতে পছন্দ করেন । সামাজিক- রাজনৈতিক অবক্ষয়ে সর্বদা গর্জে ওঠা তাঁর কলম এখনো অ-প্রতিরোধী ।সম্ভবত একারণে এবং আরো কিছু রসায়নে অনিচ্ছুক থাকায়, যথেষ্ট প্রতিভাময় হওয়া সত্ত্বেও তাঁর মতো কবিকেও ব্রাত্য হয়ে থাকতে হয়! এ পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থাবলি ঃ- পদ্মকোরকের বুক শিশিরে ভেজেনি ১৯৮৩ অছান্দিক মন্ত্রমালা ১৯৯৬ শক্তিমান সুপারম্যান নারদ্রাকাদের দেশে (ছড়া সংকলন)২০০০ অনত্থপদ সংহিতা ২০১৫ শঙ্খলাগা রোদে ২০১৬

সোমবার, ৬ মে, ২০২৪

 

এক আষাঢ়ে আলোচনা

পর্ব--এক

গতকাল ঘুম ঘুম চোখে দেখি তিনি এসে বসে আছেন মাথার কাছে পরম স্নেহে হাত বুলোচ্ছেন আমার মাথায়। আমি অবাক চোখে ধড়মড়িয়ে উঠে প্রণাম জানালাম।উনি মৃদু হেসে বললেন থাক থাক আর কষ্ট করে উঠতে হবে না। তুই কষ্ট পাচ্ছিস দেখে আর থাকতে পারলাম না। একটু গল্প করতে এলাম। কষ্ট ! আমার ! কই! কখন ! আমি তোতলাতে থাকলাম উনি মুচকি হেসে বললেন কষ্ট না পেলে খালি সব হাবিজাবি কথা লিখিস কেন মাঝে মাঝেই? কে পটি করতে যাবে লিখে হাজার লাইক,কমেন্টস ,শেয়ার পাচ্ছে দেখে তুই জ্বলিস কেন?ওরা পটি করুক, বায়ু নিঃসরণ করুক, শর্ট পরুক ,কিছুই না পরুক, খিস্তি লিখুক ,মূত্র লিখুক হতভাগা তোর কী ? তুই কি সময়? মানে মহাকাল ? নিজের কাজটা কর না বাবা।বলে ফের মাথায় হাত বোলাতে থাকলেন। আমি ভাবতে থাকলাম তাই কি ? আমি কি সত্যি জ্বলছি ? উনি ফের তাকালেন ? যেন এক্স রে দিয়ে মেপে নিলেন ভেতর টা ।তারপর মৃদু কিন্তু জলদমন্দ্র স্বরে বলতে থাকলেন

"আমবাগান তাকিয়ে আছে ধান সবুজের দিকে

সবুজ ধানে শ্বাস ফেলছে মুরগির খামার

পিচ রাস্তার ভাঙাচোরায় গেঁড়ি খুজছে হাঁস

ভেঙে পড়ছে তাসের টুকরো উপরে কপ্টার"

আমি হতবাক হয়ে মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম ।আর উনি বলে চলেছেন

নীল লেগুনের জলে

পরিদের সাঁতার শেখাতে গিয়ে

দুম করে ছিঁড়ে বসলে ব্রা-এর ঝিনুক

রূপোর মাছের পিঠ

উঁচু হয়ে দু'জনের- চিবুকে ঠেকানো

কে বলে সমস্ত রাত কেটে গেল গোধরায় ,সোমনাথ লাট

কে জানে ছক কাটা সাদা-কালো খোপে

পাওলের নামচিত্র

আঁকা ছিল কিনা

শুধু 'অনল-হক' ।আমি সত্যদেব

নেমে আসি পরিদের বিছানা অবধি

শুধু তা খেলায় হলে 'হাম--স্ত',

পূণ্যতোয়া অশুদ্ধ হয় না

যতই প্রাচীন মুদ্রা ,দাম বাড়ে তার

রাম রহিম মুদ্রা তিনের একক ' ---- বেশ কিছুক্ষণ চুপ। নিজের মধ্যে যেন ডুবে রইলেন। তারপর হঠাৎ ---- শুধু 'অনল হক' ? শুধু তা খেলায় হলে 'হাম--স্ত'!!!(নীরবতা) পূণ্যতোয়া অশুদ্ধ হয় না !!!!!!!!(নীরবতা)

যতই প্রাচীন মুদ্রা ,দাম বাড়ে তার/ রাম রহিম মুদ্রা তিনের একক ??????? (নীরবতা ) তারপর হঠাৎ চেঁচিয়ে উঠলেন 'মারহাব্বা ! কিন্তু তোর এক মস্ত দোষ এত্ প্রতীক !!! এত ইতিহাস!সুফি কলমা এত স্যাটায়ার যদি দুটি স্তবকেই থাকে তো বদহজম হবে তো। অত সময় কার? খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সব দেখবে। আর দেখবেই বা কেন তোকে দেখে কী লাভ অন্যের ।খ্যাতি পাবে সে বা তাঁরা? এক 'পাতার দীর্ঘ কবিতার প্রথম দু স্তবকেই যদি সব থাকে তাহলে বাকি অংশ তো আরও সাংঘাতিক। সুতরাং পাঠক এগুলো বাদ দিয়ে রসালো অংশ বেছে নেবে এবং সেটাই আলোচিত হবে তাইতো হয়েছে স্যর। এই কবিতার শেষ অংশে যখন আমি নিজেই নিজেকে বিদ্রূপ করে বলেছি যে আলোচক কী বলতে পারে লেখা নিয়ে ' তাচ্ছিল্যের টুসকি ওড়ে। ঠান্ডা ঘরে দাড়িতে আঙুল/ আমি ছাড়া আছে কেউ?/ এই তো

2

লেখার ছিরি ,ছাঁদ /'' লিখতে পেছন ফাটে ,সেও লিখছে স্মরগল ... /দেহি পদ কোন কেষ্ট লিখে যাবে শুনি!/এত সোজা? কী রাস্তা? মার ঝাড়ু ,তোল ময়লা সব পরিষ্কার! ---- কবিতার শেষে এই কথাগুলো আমি নিজেকে বলেছি ভবিষ্যবাণী হিসেবে। ( স্মরগল শ্লোকটি পুরো লিখে দিচ্ছি বোঝার সুবিধার জন্য--' স্মরগল খণ্ডনং মম শিরসি মণ্ডনং ----এই পর্যন্ত লিখে থমকে গিয়েছিলেন কবি জয়দেব। তিনি চান করতে চলে গেলেন আর স্বয়ং কৃষ্ণ এসে তার বেশে লিখে দিলেন পরের লাইন'দেহিপদপল্লব মুদারম' এর পিছনেও একটা উদ্দেশ্য ছিল ,যাক সে কথা আলোচকেরা পুরো কবিতার অর্থ, ছন্দ,আঙ্গিক,ইতিহাস,সামাজিক অসাম্য ধর্মান্ধতা সব উপেক্ষা করে শুধু এই অংশগুলোকে হাইলাইট করবে অপদস্থ করার জন্য এবং তাই হচ্ছে এখন!!!!!! কেউ জানতে চাইল না কীভাবে বেনিয়াদের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি কখনো ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশে কখনও ধর্মের আশ্রয় নিয়ে সেবার আবরণে ঢেকে চালিয়েছে কুকর্ম।ফিরে যাওয়ার পরে জ্বালিয়ে এসেছে বিদ্বেষের আগুন আর পুড়ে মরছে দেশ গুলো! তবু চলছে দাবার ছক সাম্রাজ্যবাদের ঝান্ডা বইছে দালালদের দল ! যেভাবে এদেশে ব্রাহ্মণ্যবাদের জন্ম হল। রাজা কুশাসক হলেও সে ভগবান বিষ্ণুর অবতার। তাঁকে অমান্য করা যাবেনা ! উল্টোদিকে বিভেদ নীতি পরায়ণ আর এক মতের বিস্তার। যার মূল মন্ত্রই হল ,অন্য ধর্ম মানে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বিরোধী, সুতরাং তাদের খতম কর বিধর্মী মানেই নিন্দনীয় ! এগুলো যে ধর্মের ভিত্তি হয় তার সংগে মানবিকতার সম্পর্ক আলোকবর্ষ দূর। তাই গোধরা জেগে ওঠে ।পুরা কালের লাট বা সোমনাথ ইঙ্গিতে গুজরাট কাণ্ড ভাসে সুফি কলমায় সত্যদেব এর কথা বলা 'হাম--স্ত' এর কথা মহত্ব আবরণে ঢেকে বিছানায় নেমে এসে ধর্ষণে পাপের ভয়হীন তারা কারণ তাঁরা সত্যদেব মানে অনল-হক এর আড়াল নিয়েছেন যে ! এভাবে ইরাণ, পারস্য, উপরিস্বাত মানে আপার স্বাত (অধুনা পাকিস্তানে অবস্থিত ) পরুষপুর মানে পেশোয়ার, উত্তরকুরু (আজকের তাজিকিস্তান) একে একে সমস্ত বর্ষের মানে ভূখণ্ডের -সাম্যের কথা এই দীর্ঘকবিতার বইটিতে অপ্রচলিত ছন্দ মন্দাক্রান্তা, শিখরিণী,শার্দূলবিক্রীড়িত ইত্যাদি বিভিন্ন ছন্দের আঙ্গিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে। তুলে ধরা হয়েছে সাম্যের নামে মাটিতে গজিয়ে ওঠা এক নতুন এক -সাম্যের দলের কীর্তির ব্যাখ্যান যা সে সময়কালে একমাত্র আমিই প্রথম বলার চেষ্টা চালিয়েছিলাম। চেষ্টা করেছিলাম তৈরি করতে এক নতুন ফর্ম। যা আলাদা হয়েও আলাদা নয়।কিন্তু কে দেখবে আমাদের ছবি? কে বলবে আমাদের কথা ? কে বুঝবে আমাদের চোখের জলের নুনের ধার? কাচঘরের আয়না দিয়ে দেখা নয়, এই অক্ষরসমূহ শরীরের রক্ত দিয়ে লেখা !

ক্রমশঃ

র্ব দু

শুধু রক্ত নয় নিজেদের নুন ঘাম লহুমাখা ভারত গাথা, যাতে আপনিতুমিআমিতুই সকলেই আছি !

---------------------------------------

যত শস্য তত ঝড় ,অনুষঙ্গে ক্রয় ক্ষমতার

সামঞ্জস্য এনে দিলে আরো বাড়-বাড়ন্ত সবার

সুতরাং আনো আরও বিদেশি ময়ূর

দু'পায়ে ঘুঙুরে বোল ... ধরেকেটেমেরে ফাঁক

ভালো চোখ দে মা কানা করে

মূলাধারে জাগো কুণ্ডলিনী

সব অলীক ! বিদেশি পুঁজি তো আসেই না বরং দেশের বাইরে চলে যায় দেশের সম্পদ!মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে।ভালো চোখ কানা করে মূলাধার স্বাধিষ্ঠান,নাভি বা মণিপুর,অনাহত বা হৃদ,বিশুদ্ধ এবং আজ্ঞা পেরিয়ে সোজা সহস্রার ! অহো কী আনন্দ সবার !

গুনগুন শব্দ হচ্ছে ,ফ্রিকোয়েন্সি নেমে যাচ্ছে নীচে

নিজেকে সরাও ভাই ,এক্ষুনি পালিয়ে এস বাঁধা গ্রিড থেকে

টেনে নিচ্ছে ভায়রাভাই মগধ ,কোশল

লেগুনের নীল চলকে বেরুচ্ছে ধাতব...

3

বঙ্গ থেকে চৌথ নিচ্ছে সবাই মগধ মানে রাজগৃহ।অর্থাৎ রাজগীর।পাটলিপুত্র মানে পাটনা আর কোশল উত্তরপ্রদেশ এর অবধ এর পাশাপাশি অংশসমূহ বৃহদর্থে বিহার উত্তরপ্রদেশ মহারাষ্ট্র দিল্লী ছড়ি ঘুরাচ্ছে সবাই ! প্রগতির রথের দৌড়ে পিছোতে পিছোতে পিছোতে পিছোতে আর জায়গা নেই পিছোনোর, তবু সদম্ভ ঘোষণা : সবকিছুতেই আমরা প্রথম ! হায় কোথায় ! স্বপ্নেও তো পিছিয়ে অনেক ।আছে শুধু চাক্কা জ্যাম,বনধ্,বক্তৃতা খুঁটি, বিজ্ঞাপনী মুখ আর পতাকা সম্বল আত্মতুষ্ট এক মহাপ্রাণীদল

সীসের ছুটন্ত টুকরো -কী গভীর উষ্ণতা মাখানো

ঢুকে পড়ল ওর বুকে , তখন সন্তানের চোখে

বিনা শব্দে যে কথা সে ইশারায় ছুঁড়ে দিয়ে গেল

তার শব্দে মেঘ জমল ,গর্ভপাত ঘটল এমন -

রাজঅন্নেপালিত মেধা স্বাক্ষরের ঢল নামা প্রথম পাতায়

আজকাল ভেসে চলা মুখ ঢাকা প্রতিদিন আনন্দ কোমায়

ডুবে থাকতে ডুবে থাকতে

একদিন ঘুম ভাঙলো তার

তখন আকাশ লাল ,ছাই এসে ভরেছে সিন্দুক!

প্রতিবাদ করা চলবে না। যেই থাকুন সরকারে।প্রতিবাদ মানেই বিরোধী শিবির।প্রতিবাদী মানেই রাজ্যদ্রোহী,প্রতিবাদী মানেই সমাজদ্রোহী প্রতিবাদী মানেই দেশদ্রোহী।নিঃশর্ত আনুগত্য চাই। শাসকের কোনও ডান বা বাম হয় না।একমাত্র দানবত্ব ছাড়া তাঁদের কোনও ধর্ম নেই। আর সাধারণ মানুষের কথা শুধু মঞ্চে মানায় , বাস্তবে সে মানুষ যেন সব ভিক্ষুকের দল ! মানবেতর ভোটের মেশিন! সব দানব শাসকের চোখে এভাবেই মানুষের পরিচয় লেখা থাকে তাই উষ্ণ সীসের টুকরো কেড়ে নিতে থাকে প্রতিবাদী মা-ভাই-বোনেদের প্রাণ ইজ্জত। আর রাজঅন্নেপালিত মেধা মিডিয়া পা চাটতে থাকে দুর্বৃত্ত শাসকদলের ।যা আগেও ঘটেছে ঘটছে আজও।

ক্রমশঃ

র্ব - তিন

আর তার ছাই যেমন সিন্দুকে ঢুকেছে তেমনি মাথাতেও জমেছে অনেক ,তাই না? মূর্খের ভাষা সহজেই চেনা যায়।যেমন--

শুধু সিন্দুকেতে নয় ,মাথাতেও জমেছে অনেক

এমন মূর্খের ভাষা!সজজেই চেনা যায়--- প্রণবকুমার !

কৈশোরে কৌমার্যহীন! দুপুর বিকেলে এসে ব্রহ্মচর্য তার

আদিতে টংকার ছিল ,আজকেও শুধুই টংকার !

লেশ নেই ওঙ্কারের ,কে ওকে বলেছে , নাকি

নাকি শুধু শূন্যের

উপরে তাসের দেশ

ছাই ঘরে লেজের আগুন

সেই শুধু বলছে এমন...

আর কারুর কি চোখ নেই ? কান নেই ? তাঁরা কি সব অন্ধ ? বধির ? শুধু একা এক প্রণব কুমারত্ব ঠ্যাঙে জুড়ে লাফাচ্ছেন!এখানে ওঙ্কারত্বের লেশ মাত্র নেই। এখানে প্রণব একটা প্রতীক মাত্র। হাজার প্রণব পুড়ে মরছে লেজের আগুনে আর ক্লেদ মেখে কুসুম পোড়াচ্ছেন মহার্ঘ কাগজ নষ্ট করে ! সুতরাং তাকে বা তাদের একঘরে কর। পাত্তা দিওনা অবজ্ঞা কর। ঘৃণা করতে শেখাও ছেলে-পুলেদের।ব্রাত্য করে দাও তাদেরকেই বেছে বেছে মাথায় তোল, যারা সব সময়ে লাথি খাওয়ার জন্য তোমার পায়ের কাছে লুটিয়ে পড়বে এই হল সমস্ত শাসককুলের চিরকালীন

4

ছক।সূচনা সিন্ডিকেটরাজের ! যা ছিল শুধু অফিস-কাছারি , আইন-আদালত, শিক্ষা ,প্রশাসনের অলিতে গলিতে ।তা ঢুকে পড়ল শিল্পের আঙিনায় ।আমাদের ঘরে এমনকি বিছানাতেও ! কিন্তু সাম্যের সেই সৌম্য চেহারা যা ছেয়ে ছিল হৃদয়ের প্রতি কুঠুরিতে ! কোথায় সে এখন ?

মধু মাধ্বীর দেশে এদৃশ্যের ছবি অসম্ভব

মান্ধাতা প্রাচীন কিছু সফটওয়ারের বুকে মাউসের ক্লিক।

মেলেনা সহজে।বারেবারে হ্যাং হওয়া অচল কুঠুরিটাকে

সেফ মোডে ফের চালু করে

ভেসে ওঠা ধান-মাঠ

পুরো স্ক্রিন জুড়ে

--- দৃশ্য কি যুগে সম্ভব !

পুরনোর ভিতের উপর দাঁড়িয়ে সৃষ্টি হয় নতুনের ।তাতে তার মর্যাদাহানি হয় না। নতুন যদি আলোময় হয় তবে তাকে স্বাগত জানালে আলোকিত হয় ঘর ।একথা যাঁরা মঞ্চে বলেন তাঁরাই আঁকড়ে রয়েছেন পুরনো ধ্যান ধারণা।একটু অন্য রকম হলেই প্রতিক্রিয়াশীল! আর এদিকে ঘুণ ধরে যাচ্ছে শাখা থেকে রাজ্যস্তরে সে হুঁশ নেই।কিছু বলা চলবে না। হাত তুলতে হবে শুধু।এই শৃঙ্খলা এবং শৃঙ্খল। সুতরাং এই অচল কুঠুরিতে ধরে রাখা আদ্যিকালের সফটওয়ারে আপডেট না করাতে হ্যাং হচ্ছে বারংবার তবু কেউ কেউ চেষ্টা করছেন সেফ মোডে ফের চালু করে তাকে শশ্যপূর্ণা করতে। তাই স্বপ্ন ভাসছে সবুজ মাঠের ।সোনালি ধানের প্রাচুর্যে বাংলা মায়ের মুখ ।স্বপ্নের মতোন হলেও তা অবাস্তব নয় মোটেই

'সম্ভব ,সম্ভব'-- বলে বিতস্তার পার থেকে সিন্ধুমধ্যকার

একটা জোনাকি এসে বসে পড়ে কাঁধে

--আমার অসুরজন-জোনাকির ছায়া ওরা

একটা রাখেনি এই গান্ধারভূমিতে ,

অবশিষ্ট আমি মাত্র এসেছি হাওয়ায়

ভেসে যাচ্ছে কুরু জন, পুড়ছে পাঞ্চাল

'পিতা'-'পিতামহ' শব্দ ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছে ওরা যজ্ঞের আগুনে

সামন্ত-পুরুত নিল যজ্ঞ অধিকার!

একটা দুলাল এত অনর্থ ঘটাতে শেখে কী করে এখানে !

বহুবার ছবির দিয়েছি আভাষ ,কেউ গ্রাহ্য করোনি!

কাশিপুর থেকে পাশে বরানগরের

নিমতা,কামারহাটি ,জেলায়-জেলায়

আপাত শান্তির রাজ্যে ধারালো ফলায়

ফালা ফালা তুলে নিচ্ছে সন্তানের হাড়

বদলাবে আজ কী সাধ্য তোমার !

ভিন্ন ভিন্ন মত (মহাভারত ,রামায়ণ, বৌদ্ধ , জৈন সহ ১৯ টি ধ্যান -ধারণা থাকলেও ধরে নিচ্ছি পূর্ব বৈদিক যুগে যখন মাতৃতান্ত্রিক কাল থেকে বেশ কিছু কাল যখন শিকার ভিন্ন আর কিছু কেউ করত না এবং ছোট ছোট যাযাবর গোষ্ঠি খাবারের সন্ধানে এক জনপদ থেকে অন্য জনপদে যাতায়াত করত। ধরে নেওয়া যেতে পারে কালটা ৩০০০ খ্রিঃপূ সেই সময়কালে মধ্য এশিয়া অর্থাৎ পামীর অঞ্চল যাকে তখন উত্তরকুরুর অংশ ভাবা হত। তাজিকিস্তান কাজাকিস্তান ইত্যাদি অংশ ছিল এর মধ্যে। সে সময় কালের অনেক নদী ভূখণ্ড আজ নেই। তবু

5

তাপ্তি ,বিতস্তা আজ আছে। ঋগ্বেদে ঝিলাম নদীকে বিতস্তা’’ নদী হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে অপরদিকে প্রাচীন গ্রীসে এই নদী হাইডাস্পি নামে পরিচীত ছিল। আর্যরা ঋগ্বেদে এই নদীকে অত্যন্ত পবিত্র নদী হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং ঋগ্বেদের অনেক জায়গায় সপ্তসিন্ধু নামে যে শব্দটি পাওয়া যায় ধারণা করা হয় যে, ঝিলাম নদী এই সপ্তসিন্ধুর মধ্যে একটি।তখন তাজিকিস্তানকে 'বক্ষু' উপত্যকা বলা হয়েছে। পঞ্চাল হচ্ছে রোহিলাখণ্ড জনপদ ,উত্তরপ্রদেশ।গান্ধার অর্থাৎ আফগানিস্তান তক্ষশীলা এবং মাদ্রপুর মানে শিয়ালকোট। এই সময়কালে 'জন' অর্থাৎ গণ এর উদ্ভব। জনদম মানে যৌথবাসগৃহ। 'জনপিতর' মানে নির্বাচিত জন প্রতিনিধি। 'সুর' অর্থাৎ যাঁরা সুর জনজাতির মানুষ এবং '-সুর' হল যারা সুর ভিন্ন অন্য গোষ্ঠীর খাদ্যের অধিকার রক্ষায় সবাই লড়ে যাচ্ছে। উন্মোচিত হচ্ছে নতুন নতুন শিকারস্থল ।তার অধিকার নিয়ে ঝঞ্ঝাট। পুরনো প্রথা পিতা-পিতামহ ছুঁড়ে ফেলে নতুন প্রথার আন্দোলন শুরু। শক্তির খেলা একালের হাত-কামান,ক্যাসেট বম, কৌটো বম , দেশী বেরেট্টা ,নাইন এম এম ইত্যাদির বদলে তামার কুড়ুলের সঙ্গে পাথর কুড়ুলের ! ব্যাপারটা একই। ইতিহাসও ঘুরে ফিরে আসে।দুষ্ট সামন্ত আর লোভী পুরুতরা যদি যজ্ঞ অধিকার দখল করে তাহলে যা হওয়ার তা- হয়। একটা দুলাল নানা রূপে নানা রঙে ভিন্ন নামে ফিরে ফিরে আসে আর অশ্রুর নদীতে বান ডেকে যায় মনে আছে তো সেই সব দুলালদের কথা? ...

ক্রমশঃ

পর্ব - চার

আধশোয়া তিনি হঠাৎ চেঁচিয়ে উঠলেন :এবার থাম। দেখতে পাচ্ছিস লোকে তোকে কীভাবে দেখছে? যে বেদনা তোর মধ্যে আছে তাতে সুর ভরে দে পারবি ? পারব কিনা জানিনা তবে চেষ্টা করতে পারি।তবে কারুর চিন্তায় তো আমার কোনও অধিকার নেই। যে যা খুশি ভাবতে পারেন। তির যে সঠিক লক্ষভেদ করছে তা প্রমাণ হচ্ছে এখানেই। চক্ষুষ্মান ব্যক্তিরা দেখতে পাবেন ঠিক। এই আলোচনায় যাঁরা এখানে দেখেছেন

অন্তত এইখানে প্রকাশ্যে এসেছেন যাঁরা, তাঁরা সব নিরপেক্ষ ব্যক্তিত্ব। এঁদের কারুরই এই লেখকের কাছে কিছু পাওয়ার ছিলনা, এবং লেখকেরও কিছু দেওয়ার সামর্থ্য নেই; একমাত্র ভালবাসা ছাড়া ।নিঃস্বার্থ ভাবে তাঁরা শুধু কবিতার টানে এখানে এসেছেন প্রণাম জানাই তাঁদের।আড়াল থেকে দেখছেন যাঁরা,উপেক্ষা করে আসছেন আবহমানকাল; তাঁরা সকলেই তো এই কলমের অপার শক্তি। প্রণতি তাঁদের প্রতি। এহল - পুরশ্চরণের অংশবিশেষ। পুরশ্চরণ মানে , যে পুজোয় বসেছিঅর্থাৎ কলম কে আরাধ্য ভাবা ইস্তক,অভীষ্ট পূরণের এক আশার উচ্চার।প্রাণের খাবার কী কী মেনু তার?

মেনু ছিল এরকম:

জলফড়িং এর চোখ,ঝিঁঝিঁর চিৎকার

ধনেশ পাখির ঠোঁট ,সেগুনের ছাল

ইঁদুরের তোলা মাটি, বনের ডুমুর

হাতিশুঁড় কেশুত্থের ছায়া হোগলার

প্রথম বৃষ্টির গন্ধ ,চালতা গাছের

পাতা থেকে খসে পড়া শুঁয়োপোকাদের

গুটি হয়ে জমে থাকা, টিনের চালের

উপরে বাড়তে থাকা লাউ-কুমড়োর

সঙ্গে জড়িয়ে থাকা সাপের খোলস

পছন্দ হলনা কারো ,

সুতরাং আগে বাঢ়ো পেপসি-কোলায়

ঢেকে নাও কবিতার আপাদমস্তক

6

গমের খোসার লাল, কর্পূর সফেদ

পুরনো বরফ থেকে একটু নীলের

সামান্য এফেক্ট দাও,

এবং ভাষার

চুঙ্কু ধরে মাঝেমধ্যে

নেড়ে চেড়ে দিও...

এই যে পুরশ্চরণ এবং খাদ্যতালিকা অর্থাৎ মেনুগুলো কেমন বাঙালি বাঙালি না? কেমন সেকেলে গাঁ-গঞ্জের সেন্টুর পারফিউম মাখানো !বাতিল কর সব যেমন আলোচকদের চোখে এই সব লাইনগুলো কোনও অর্থই প্রতিভাত হয় নি। এই সোঁদা মাটির গন্ধ ,জলফড়িং এর চোখ, ঝিঁঝিঁর চিৎকার, প্রথম বৃষ্টির গন্ধ ইত্যাদির কোনো ব্যঞ্জনাই নেই। যেটুকু ব্যঞ্জনা আছে তা ওই ভাষার চুঙ্কু ধরে নেড়ে দেওয়ার মধ্যে! এই হল একালের বিশেষত্ব।সুতরাং একে আধুনিক করতে পেপসি-কোলায় আনন্দধামে কবিতাকাদেমিধামে পৌঁছনোর পুরশ্চরণের প্রথম ধাপ হল ঢাকো কবিতাকে অই পেপসি-কোলা ধামাকায়।ঢাকো গমের খোসার লালে বিদেশির ঢালে আর দেশীয় পদ্ধতির কিছু ছোঁয়া পেতে দীর্ঘকাল জমে থাকা তুষারের থেকে নীলের এফেক্ট দিয়ে ভাষার চুঙ্কু ধরে নেড়েচেড়ে দাও ।তাহলেই অবহেলে সব অকাদেমি ।তাহলেই আলো গুলো তোমাকেই ঘিরে!এই কি নিদান ?

না।

হল নিদান ,অর্থাৎ বিজ্ঞান

এরপর নামরূপ বিশ্বপ্রবাহ

"রূপ্যাতি ইতি রূপঃ"

পাঁচ কাধে এরই নাম ইন্দ্রিয়গ্রাহ্যতা

--এই নিদান বড় জটিল এক তত্ত্ব। এই দর্শন গড়ে উঠেছে বুদ্ধের প্রতীত্য-সমুৎপাদ তত্ত্ব থেকে।বুদ্ধের ধারণায় বিশ্বে স্থায়ী বা নিত্য পদার্থ কিছু নেই। বিশ্ব কতগুলো জ্ঞান,অনুভূতি, চিন্তার গ্রথিত মালার মত। "ইমস্মিং সতি ইদং হোতি। ইমস্ উপ্পাদানা ইদং উপমজ্জতি। মানে হল -- এই হতে এই হয় ; এর উৎপত্তি থেকে এর উৎপত্তি।বুদ্ধ দ্বাদশ নিদান দিয়েছেন যা কিনা প্রতীত্য -সমুৎপাদ অবিদ্যা থেকে আসে সংস্কার।সংস্কার থেকে বিজ্ঞান, বিজ্ঞান থেকে নাম-রূপ ।নাম-রূপ থেকে ষড়ায়তন। ষড়ায়তন থেকে স্পর্শ।।স্পর্শ থেকে বেদনা,বেদনা থেকে তৃষ্ণা ।তৃষ্ণা থেকে উপাদান। উপাদান থেকে ভব।ভব থেকে জন্ম।জন্ম থেকে শোক,আক্ষেপ,দুঃখ,ভোগ,অবসাদ, নৈরাশ্য,জরা , মরণ এই হল কার্য-কারণ মালার ১২টা অঙ্গ।এই কার্য-কারণ মালা একটা চক্র যার প্রথম নিদান 'অবিদ্যা' আর শেষ নিদানটি মরণ 'মরণ' প্রসঙ্গ অত্যন্ত বিশাল এক কূল কিনারাহীন এক সাগর। বুদ্ধ বলেছেন যিনি প্রতীত্য-সমুৎপাদ তত্ত্ব জানেন তিনি ধর্ম কে জানেন। ব্যাপারটা কেমন আস্তে আস্তে রসহীন হয়ে দাঁড়াচ্ছে ,তাই না? আসলে গোল পাকিয়েছে 'বিশ্বপ্রবাহ'

কবিতাংশটি।আলোচকদের চোখে তো অংশ মূল্যহীন বলে মনে হয়েছে এবং এই লেখককেও! তাই লেখককেই ব্যাখ্যা দিতে হচ্ছে আজ! নামরূপ কে বিশ্লেষণ করলে পাঁচটি স্কন্ধ বা উপাদান পাওয়া যায়। তারা হল -

রূপ- রূপ্যাতি ইতি রূপ যার রূপ আছে ।সব ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বস্তুর প্রকাশ হল রূপ। এই রূপ ছাড়া আর চারটি স্কন্ধ -- বেদনা, সংজ্ঞা, সংস্কার, বিজ্ঞান এখানে বিজ্ঞানের অর্থ করা হয় বুদ্ধি। আমরা তাকে মনন কার্য বলতে পারি ।এতক্ষণে নিশ্চয়ই উপরের পঙক্তিটির উদ্দেশ্য বিধেয় আলো পেয়েছে। কী বলেন মাননীয় শ্রদ্ধেয় শ্রদ্ধেয়া কবিতা প্রেমীরা ?

ক্রমশঃ

 

 

 

7

পর্ব - পাঁচ

ধ্যানমুদ্রা থেকে উঠে বসে তিনি বললেন বিষাদগ্রস্ততা মানবের একটা সাধারণ বৈশিষ্ট্য যেটা এখনও তুই কাটিয়ে উঠতে পারিস নি কাটিয়ে উঠলে এত অল্পে আনন্দিত এত অল্পে কষ্ট পেতে হত না।অনিত্য জগৎ লিখছিস কিন্তু উপলব্ধি করছিস না। বলছিস কিন্তু ধারণ করবার মত আধার নেই কারুর প্রশংসা তোকে উদ্বেল করে , উপেক্ষা ও। কেন ? এখনও বহু পথ চলতে হবে রে ।।

ঠিক তাই। কদিন সত্যি বিষাদগ্রস্ত ছিলাম.১। সামাজিক প্রাশাসনিক অবক্ষয় নিষ্ঠুরতা এবং ২।ব্যক্তিগত কিছু সুখানুভূতি কিছু দুঃখ। আলোচনা এগোবার সাথে সাথে কিছু বিশিষ্ট প্রাজ্ঞ জনের ভালবাসা শুভকামনা পেয়ে উৎসাহিত হয়েছি আবার কিছু লোক যে আমার থেকে দূরে সরে যাবেন জানা সত্ত্বেও;সত্যি সত্যি তাঁদের দূরে যাওয়া দেখে কষ্ট পাচ্ছি না নিজের জন্য নয় ,তাঁদের মুখোশ খুলে পড়া দেখতে পেয়ে অন্তত আশা করেছিলাম যে, কিছু সত্যনিষ্ঠ প্রজ্ঞা কিছু সততা কিছুটাক নিরপেক্ষতা সেই প্রিয়জনদের মধ্যে হয়তো বা থাকবে ; কিন্তু না। রূঢ় আলোয় বিকট করে ধরা পড়ল ওদের প্রকৃত স্বরূপ ।তবু আশা হয়তো সময় চৈতন্য দেবে। কিন্তু নিজের মত একমহামূর্খের খোঁজ পেয়ে নিজেই হতবাক। আজকাল যেখানে কেউ বিনা স্বার্থে কারুর জন্য কিছু করে না সেখানে যে কয়েকজন যে কোনও কারণে হোক যেভাবেই হোক আমার কিছু সৃষ্টি তুলে ধরছেন চাঁদ সদাগরের মা মনসাকে পুজো দেওয়ার মত এই আলোচনা দেখে তাঁরা আর ওটুকুও করবেন না এবং ভবিষ্যতে উপেক্ষা করবেন এটা জেনেও এই আষাঢ়ে আলোচনা শুরু করতে হল !!!নিজের কাছেই এর উত্তর হচ্ছে -- হ্যাঁ হল ।কারণ প্রকৃত সত্যের উদঘাটন একজন প্রকৃত মানুষের ধর্ম। লক্ষ করুন যাঁরা লালায়িত আলোচনার নামে সব ভূষিমালের ভূষিমাল মানে ; যে সব আলোচনায় শুধু অমুকে অমুক বলেছেন এই সবেই তিন চতুর্থাংশ ব্যয় করার পরে আলোচ্য বিষয়ের একটা দুটো প্রক্ষিপ্ত পংক্তি তুলে ধরে বিষয়ের মধ্যে না ঢুকে যে বক্তব্য উপস্থাপন করা হয় তাতে যাঁরা আহ্লাদ করেন; তাঁরা। মানে সেই সব আহ্লাদিত লেখক এবং তার আলোচক যাদের ব্যাপক উপস্থিতি যে কোনও গণ মাধ্যম তথাকথিত -ব্যবসায়িক খই-মুড়কি-চড়ুইভাতি পত্রিকাগুলোতে গণসংক্রমণের পর্যায়ে আজ পর্যবসিত হয়েছে। এঁদের স্তাবককুলও এখন বিশেষ এক বৈদ্যুতিন মাধ্যম আন্তর্জালে আগাছার মত প্রসারিত।

যেমন জামার কাঁধে কাকেদের মলত্যাগ -রূপী না অরূপী

কাক দৃশ্যমান হলে বিষ্ঠাত্যাগে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্যের

সেন্স ডেটা বেড়ে যায়

সংজ্ঞাহীন তখন কৈতব১

সে ভাষা চেনায় চোখ, সে ভাষায় তখন শামরী

অনর্গল মুখখারাপে ঝরনা নেমে যায়

তবু যেন হারিদ্রহারিণী৩

কম্বুকণ্ঠ ভেসে ওঠে ঘাসের ছায়ায় !

রোদ পোহায় দীর্ণরাত,বনগাঁ লোকাল

দমদমের কাছে এসে রোজ থেমে যায়

কারা নামে ? কী নামায় ? ভাবের ঘরের

ফুটো দিয়ে কিস্তিমাত করে অন্য লোক!

বুদ্ধের দার্শনিক চেতনায় নামরূপের যে পাঁচটা উপাদান বা স্কন্ধ আমার আগের পর্বে আলোচনা করেছি তাদের আবার দুটো শ্রেণিতে ভাগ করে বলা হয়েছে রূপী অরূপী। রূপী স্কন্ধটি হল যা আমরা জেনেছি/জানা যায় বা জ্ঞেয় বস্তুগুলো, আর অপর চারটি উপাদান অর্থাৎ বেদনা,সংজ্ঞা,সংস্কার,কর্ম দিয়ে গঠিত অরূপী। বেদনা হল ইন্দ্রিয়ানুভূতি, সংজ্ঞা হল ইন্দ্রিয় জ্ঞান, সংস্কার হল প্রবৃত্তি, আর বিজ্ঞান হল মনন কার্য।এইভাবে বৌদ্ধ দর্শন মতে এদের নিয়ে যা গড়ে ওঠে তা হল জ্ঞাতা, তার দেহ নেই ।তার সংগঠক উপাদানেরও দেহ নেই বলেই তারা অরূপী ।এইভাবেই জ্ঞাতা জ্ঞেয় রূপী অরূপীর সংযোগে গড়ে ওঠে চেতনা প্রবাহ

এবার অনত্থপদ সংহিতা কাব্যগ্রন্থ আশ্রিত নামকবিতার উপরোক্ত কবিতাংশটি বোঝা বোধহয় একটু সুগম হল ।এই স্থবির সমাজ আজকের আর্থসামাজিক মানস বোঝার এবং তাকে চিত্রিত করার মানসে এই ক্রম পর্যটন শুরু হয়েছিল নয়ের দশকের প্রথমাংশে এবং তা ক্রমে প্রকাশিত হতে থাকে একটি পত্রিকায় কিন্তু পরবর্তীতে সে গুলোই দেখা যায় অন্য কারো ঝুলিতে এবং আদি ভুলে অন্তে জোর দেওয়া শুরু করেন অন্ধ স্তাবক আর খ্যাতির ভিখারি কিছু লোভি ধান্দাবাজ। একে একে ধাপে ধাপে সেদিকেই এগুব। বোঝার সুবিধার্থে এই অংশের কিছু শব্দের অর্থ দিলাম--- - কপটতা,ছল, জুয়া খেলা, অনৃত বাদ,চাটুবাদ,তোষামোদ বাদী, চাটুকার ইত্যাদি -শ্যামবর্ণা গাভী --হরিদ্রাবর্ণ হারভূষিতা

ক্রমশঃ