আগুন
সম্ভবা
বারুদে ভর্তি ছিল তার তলপেট
আগুন সম্ভবা সে আগুন সম্ভবা
ধেয়ে এল নদী হয়ে কখন মাটিতে
কেউ দেখলনা আর কেউ শুনল না
দেখেছিল বুঝি প্রায় নগরতক্ষক
টকটক টকটক ডেকে উঠেছিল
শোনেনি মানুষ কোনও,শুধু এক মেয়ে
হাততালি দিয়ে ওকে স্বাগত জানালো
মেয়ে কী মানুষ নয়,কেন এ কুকথা!
বোঝ যদি তবে আজও শিকলের প্রথা
রেখেছ বন্দী কেন মনের চাতালে
খামচাতে পার যাতে সু্যোগের পালে !
সুযোগ সুযোগ পেয়ে ডালের
উপর থেকে লাফিয়ে মাটিতে ,মাটি থেকে এক লাফে স্করপিও গাড়ির আরাম দায়ক সিটে পা দুটো
তুলে ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল এসিতেও ঘেমে-নেয়ে ভীষণ অস্থির...
গাড়ি দৌড়য়; তিনি ঘামতে
থাকেন । ঘুঘুরা ঘুরতে থাকে কাঁপা কাঁপা ধোঁয়া ওঠা
ক্ষেতে ফসলের।
আগুন হাঁটতে থাকে পিছন
পিছনঃ একটু বাইট দেবেন?মাত্র দু মিনিট? বুম ঢুকে যায় কাচ দেয়াল পেরিয়ে।
‘এখন ওসব কথা বোলনা আমায়।সব
জানা আছে,কারা এই সব কথা রটাচ্ছে এখন,আইনচলবে তার নিজের নিয়মে ,ব্যস, এতটুকু ...’
সে এখন দৌড়চ্ছে লয়ের পতনে
সুর- ছন্দ বেসামাল
যে মেয়েটা পড়েছিল নগ্ন ধান-ক্ষেতে ওকে মেরেছিল কারা?
সমালোচনার দায়ে কারা বা পুড়িয়ে ছিল কবির স্কুটার!
হিংসার রং সব এক-ই রকম শুধু ওই বদলানো পাল
ক্ষমতা উজান ধরে ভেসে যায়স্বেচ্ছাচার বন্দরের দিকে
ওই সে সমুদ্র-চিল যে প্রথম মাটি-গন্ধ
পৌঁছে দিয়েছিল
ওই সে কবিতা খানি যার মধ্যে ঢুকে গেল আস্ত এক নদী
একটা বিশাল পাহাড়,পুঞ্জ পুঞ্জ বরফের চাদর জড়ানো
রিম ঝিম ঝর্ণারা, কিছু সাদা হাঁস আর কয়েকটা হরিণ
একটা বাড়িও ছিল ঘনঘোর জঙ্গলের রঙেতে
রাঙানো
ইচ্ছে ছিল ওইখানে দুপুর রঙের এক কবিতা বসাব
তাতে থাকবে গমরং মায়াবী মেয়েরা যারা মেঘ রং চুলে
অসংখ্য জোনাকি দিয়ে ভরে দেবে আমাদের সম্পূর্ণ আকাশ
চেরীমদরঙঠোঁটে সন্ধ্যারাগ সেজে উঠবে পুরিয়া-কল্যাণে
অক্ষরেরা সেজে আসবে কাচপোকা টিপে,আলো ও ছায়ায়
বেজে উঠবে সুমধুর রুদ্রবীণার ধুন ঘাসের ফরাশে
ইচ্ছে ছিল এরকম,হ’ল অন্য কিছু ;যা লিখতে
অক্ষর ও অক্ষম
আর সে কবিতাখানি ভীষণ বাদামি হয়ে
গর্জালঃ হালুম--
আর তার পর থেকে দৌড়তে দৌড়তে কখন যে
ঢুকে গেল
এই লোকালয়ে,বুঝি, তারও মনে নেই।
আমি সে বাস্তব আমি সব লক্ষ রাখি আমি ট্রাফিক সিগন্যাল
আমি সেই অন্তর্জাল প্রতিটি মুহূর্ত সাক্ষী তোমার ঘরের
আমি এফ বি-র পোস্ট যা তুমি করবে আর কিছুক্ষণ পরে
আমিই সে ব্যঙ্গচিত্র যার জন্য শাসকেরা দেখায় গারদ
আমিই সে দময়ন্তীর বদলীর আদেশ ;সত্যি বলবি কখনো?
আমি সেই জ্ঞানেশ্বরী আমি মাওবাদী
আমিই মরিচঝাপি আমি বান্দোয়ান
সিঙ্গুর নেতাই আমি,আমি বর্ধমান
আমরা সারদা মা’র অবোধ সন্তান
আমি সেই প্রশ্নবান সারের দামের
আমি সেই চিকিৎসক স্নায়ু বাঙ্গুরের
আমি সেই রাগি চড়, শিক্ষিকার গাল
আমি সে পুলিশ খাঁকি,ডাকি বিডিওকে
আমিই চুলের মুঠি ধরেছি তখন
টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেছি মহাকরণের
এপ্রান্ত ওপ্রান্ত জোড়া আমি করিডোর
আমি সে ক্যামেরা,বন্দী করেছি তোমাকে।
এরকম কথাবার্তা শেষ হওয়ার মুখে
টিকটিকিটা পড়ে গেল মেঝের উপর
বছরের আজ বুঝি ঊষ্ণতম দিন
প্রতিটি অক্ষর আজ ঘামে ভিজে গেল
বৌদিবাজ ছোকরারাও কেউ কোথাও নেই
তবুও সন্দেহ খুঁজে বেড়ায় তাদের
খসানো লেজের গায়ে পিঁপড়ের সারি
টেনে নিয়ে চলে সম্বৎসরের খাবার
ঘামে ভিজে অক্ষরেরা অবোধ্য যখন
বৌ বলে গেল ঠিক, ঠিক-ই হয়েছে
যত বলি লেখ প্রেম; লেখে রাজনীতি
স্কুটার পুড়েছে , আজ বাড়ি না পোড়ায়...
আমার কবিতা কেউ কখনো পড়েনি
কবি বলে কেউ ডেকে ওঠেনি বলেই
আমার এ সবকটা আঙুল স্বাধীন
মানুষ ডাকেনি বলে নদী ডাকবে না
তেমন অক্ষর আমি কখনো লিখিনি ।
২৮।০৪।১৪

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন