ভোরের দুপুর
আশ্চর্য ‘জানালাময়ী’ থমকে আছে বহুক্ষণ জলের উপর
লোহার রেলিংঘেরা টুকরো বারান্দার ধারে আলোকবিভায়
আধাঁরদুহিতা যেন উবু হয়ে শুষে নিচ্ছে মেঘেদের প্রাণ
এবং উচ্ছ্বল ওই ধারাটিও তার সাথে মিশে যেতে চেয়ে আজ একদম স্থির
এখন এভাবে ভোর-দুপুরের পায়ে আত্মসমর্পণ করার ভঙ্গিমাটুকু
এঁকে নিতে কথাশিল্প ফিকে পরে যায় আর উপরের ঘন মেঘ চুমু খেয়ে যায়
‘গরজন কে বাদরবা,বরষণ কে
আয়ি আজ’ ঢিমে একতালে চলা কারো অভ্যাস
ছুঁতে আসছে দূর থেকে, ‘জানালাময়ী’কে ঘিরে খেলে যাচ্ছে ঘোর কালো ভোরের দুপুর ...
কবিতার মতো
না লিখে কলম ভাসে ,মেঘে মেঘে মাখা সে রোদ্দুর এল বিকেল বেলায়
গা থেকে আরেক ‘গা’য়ে, নি থেকে আরেক ‘ণি’য়ে ছুঁয়ে মিশে গেল
মিশ্র কোনো রং যেন স্বপ্ন ছুঁয়ে ছুঁয়ে এসে মধ্যমে দাঁড়াল
আর, কাঁটা দিয়ে উঠল শরীর ।
তৈরি হওয়া অপরূপ মুখের আদল এইপূর্ণতার ক্রমে ক্রমে ছড়ায় পাহাড়ে
যেন সে আকাশগঙ্গা২২সাথীকে নিয়ে সাবলীল খেলে যায় যে কণ্ঠে তোমার
একবার ছুঁতে দেবে ? চুমু খেতে দেবে মেঘেদের?
তারা যে আমার মতো ভিজেছে আলোয় ।
ছোট্ট ফ্ল্যাটের মধ্যে এখন কৈলাশ , রূদ্রবীণা মগ্ন সেও খাটের উপর
তারের ঝংকার কণ্ঠে ,কণ্ঠের ঝংকার বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডের সুরে মিলে যায়
আলো আসে, আলো যায়,আমার কলম শুধু লিখে যায় ; ঈশ্বরী, ঈশ্বরী...
গোঁসাই বাগানে
যাকে পড়াই হ’লনা আজো, সে হঠাৎ সামনে দাঁড়িয়ে
বলে উঠলঃ আমি কিন্তু ঐ সব করে
দিতে পারি
আমি কুড়ুল কোদাল বেলচা ভোজালি
বন্দুক করে দিতে পারি
ছবির মতন...
যাঃ! আমিতো পারিনা কিছুই ,
হাবিজাবি লেখা ছাড়া,
আম-আঁটির ভেঁপু অব্দি বাজাতে
শিখিনি, চেনে না কেউই
রাজ্য- দেশ দূরস্থান , পাড়ার
লোকেরাও মাথা চুলকোতে চুলকোতে
বলেঃ কবিতার ছিট আছে ওইটা নয়তো ?
আমি সেই ‘টা’ তে ঝুলে অপেক্ষায়...
শম্পাদের গাছ বেয়ে জানালাটপকে রোজ
যে কাঠবিড়ালিটা এসে গল্প করে যেত
তাকেও দেখিনি ক’দিন,তবু্,আশা করে আছি ; এবার আম হবে
খুব
ভরন্ত পেয়ারা ঝুলবে গোঁসাই
বাগানে। খেতে না পারি,দেখতে তো পাবো
কাঠবেড়ালির পায়ে ভর দিয়ে ছুটে যাওয়া
গাছের উপর থেকে
কী যত্নে রোগা হাতে গোঁসাই মশাই
গড়ে তুলছেন তাঁর নতুন ফসল!
(মা-ভাষা ,তোমার জলে স্নান করবার কথা ছিল
অথচ তা দূরে ঠেলে মিশে যাচ্ছি শুধু লোনা জলে!)
শুনেছি জন্মের থেকে রিমঝিম নূপুর
তোমার
খেলেছি তোমার সঙ্গে সারাক্ষণ
আলো-অন্ধকারে
তোমার গয়না গুলো চুরি করা সম্ভব
না হলে
২৪ ঘন্টা জুড়ে রাত-ই পাহারা দেবে এ- ভুবন
অধরা অনেক শব্দ, তবু ধার নিই
পড়শীর
যেই বলি ‘সাদা হাস’,অপমান গায়ে এসে বসে
যেন তা সে বিন্দু বিন্দু শত ধ্বনি
জল ঝর্ণার
কর্কটক্রান্তি জুড়ে সেদিনের জমানো
ঘামের
সব বিন্দু একে একে সমুদ্রের মধ্যে
মিশে যায় ...
ভিজে অপমানে
এই দ্যাখো জমি এক ফালি
এই দ্যাখো জল এক অঞ্জলি
এই দ্যাখো অক্ষরের গা’য়
অপমান হেসে চুমু খায়
এই দ্যাখো বালি সাদা সাদা
তার উপরে তর্কের কাদা
জমে জমে জেগে ওঠে চর
গড়ে তোলা অপমান-ঘর
এই দ্যাখো রাস্তা এক ফালি
ওই পথ সুধন্যপুরের
দিয়ে যায় শুধু অক্ষরের
মালাগাঁথা অপমান-থালি
যা লিখেছি এযাবৎ সব
ভোর রাগে যেন সে ভৈরব
অক্ষর-রাগিনী এসে পা-য়
কোমল রেখাবে জড়ায়
khub valo laglo
উত্তরমুছুন